অবশেষে শিশু সাদিকের বালিশ মায়ের স্যানিটারি প্যাড!

কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এক শরণার্থী শিবির। গাদাগাদি করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা ছোট ছোট ঝুপড়ি আর তাঁবু খাটিয়ে বাস করছে। শোনা যাবে অনেক শিশুর কান্নার শব্দ। তাদের অনেকের জন্ম মিয়ানমারে, অনেক শিশুই প্রথম চোখ মেলে দেখেছে বাংলাদেশের কাদা-জল।

বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া এমনই এক রোহিঙ্গা শিশুর কথা উঠে এসেছে বিবিসির প্রতিবেদনে। শিশুটির নাম আনোয়ার সাদিক। সাদিক যখন গর্ভে, তখন মা মোহসেনা পালিয়ে আসেন বাংলাদেশে। দুর্বল শরীর নিয়ে স্বামীর হাত ধরে চার দিন ছোটার পর আশ্রয় নেন কুতুপালং শিবিরে।

মোহসেনা বলেন, আমরা তড়িঘড়ি করে আমাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসি। আমার ও আমার শিশুর জন্য কোনো জামা-কাপড় নিয়ে আসতে পারিনি। এখন তাকে  শুধু একটুকরা কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখি। সাদিকের জন্মের পর ৩০ দিন আমার রক্তক্ষরণ হয়। এই ৩০ দিনের জন্য আমাকে দুটি স্যানিটারি প্যাড দিয়েছিল। সেগুলোরই একটি আমি সাদিকের বালিশ হিসেবে ব্যবহার করি। তবে তার বিছানা বানানোর জন্য আমার কোনো কাপড় নেই।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি ঝুপড়িতে সাদিকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন মোহসেনা। শিশু সাদিক নির্বাক চোখে নিষ্পাপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছিল আকাশ। চেনার চেষ্টা করছিল সবকিছু।

হতাশ চোখে মোহসেনা বলেন, ‘সাদিক যখন গর্ভে ছিল, তখন আমার পেটে লাঠি দিত। আমি ভাবতাম সে একটি সুন্দর ও শান্তির পৃথিবী পাবে। কিন্তু এখন আমি একটি শরণার্থী শিবিরে আছি। আর এটা কোনো সুন্দর জায়গা না।’

তবে রোহিঙ্গা শিবিরে সাদিক একা নয়। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে রয়েছে কমপক্ষে দুই লাখ শিশু। জাতিগত ও ধর্মীয় উগ্রবাদের শিকার এসব শিশুর শৈশব অনিশ্চিত, অন্ধকার সামনে পড়ে থাকা দিনগুলো।

About স্টাফ রিপোর্টার

Check Also

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

দুর্নীতির দায়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *