চিকিৎসা করাতে চরম ভোগান্তির শিকার সাধারণ রোগীরা

করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। এ ভাইরাসের উপসর্গের সঙ্গে সামান্য মিল পেলেই রোগী ভর্তি অথবা চিকিৎসা সেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ কোনো কারণে সর্দি, জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলাব্যথা থাকলে অন্য কোনো রোগের চিকিৎসা করাতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক রোগী এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে করতেই প্রাণ হারাচ্ছেন।

শুধু তাই নয়, স্বাভাবিক সময়ে যেসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক রোগীতে ঠাসা থাকত সেগুলো এখন প্রায় রোগীশূন্য। করোনা ছাড়া বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, চিকিৎসাসেবা না পেয়ে তারাও হাসপাতাল ছাড়ছেন। এমনকি অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বন্ধ রেখেছেন ‘প্রাইভেট চেম্বারে’ রোগী দেখাও।ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রথম সারির বেশ কয়েকজন শিশু বিশেষজ্ঞ রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকায় প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখতেন। করোনা সংক্রমণের পর থেকে কিছুদিন ধরে তাদের চেম্বার বন্ধ রয়েছে। ফলে অনেক পিতা-মাতা অসুস্থ শিশুসন্তান নিয়ে বেশ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোয় একই অবস্থা বিরাজ করছে।

নানা অজুহাত এবং লোকবল সংকটে কোভিড নির্দিষ্ট ৯০ ভাগ হাসপাতালেই দেয়া হচ্ছে না প্রসূতি সেবা। এতে করে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি মনোবল হারিয়ে ফেলছেন ভুক্তভোগীরা।

সব ধরনের কোভিড পজিটিভ রোগীর জন্যই কোভিড নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলো। অথচ ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা হাসপাতাল ছাড়া কোভিড নির্দিষ্ট কোনো হাসপাতালেই নেয়া হচ্ছে না প্রসূতি মায়েদের। হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে তাদের।ভুক্তভোগীদের একজন বলেন, হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে করোনা পরীক্ষার ফল লাগবে। সেটা ছাড়া কোনোভাবে গ্রহণ করবো না। নারীর স্বামী বলেন, আল্লাহ যে বাঁচাই রাখছে এটাই বিরাট কথা। গর্ভবতী ‘করোনা’ বলে তারা চিকিৎসা দেবে না। তাদের নাকি সে ব্যবস্থা নেই।

ঢাকা মেডিকেল গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগীয় প্রধান বলেন, সকল গর্ভবতীই চিকিৎসা কোথাও থেকে না পেয়ে ঢামেকে চলে আসছে। যার ফলে আমার অনেক অনেক চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেছে।

প্রসূতি মায়েদের সেবা শুরু করতে জনবল বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম।

রাজধানীসহ দেশের সব হাসপাতালে আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হল। সব হাসপাতালে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদের জন্য পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) দেয়া হল। যদি রোগীদের সেবা দেয়া না হয় তাহলে এগুলো করা হল কেন।

About স্টাফ রিপোর্টার

Check Also

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

দুর্নীতির দায়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *