মুখে দুর্গন্ধ নিয়ে অনেকেই দুর্ভোগে ভোগেন। কারণ দেখা যায় ব্যক্তির বাহ্যিক পরিপাটি এতটাই আকর্ষণীয় ও সমাদৃত, কিন্তু তিনি যখন সুধীসমাজে কথা বলতে যান তখন তার মুখ থেকে আগত দুর্গন্ধ তাকে সবার কাছে পরিহারের পাত্র হিসেবে বিবেচনা করে।
কারণ-
১. কিছু গন্ধযুক্ত খাবার আছে, যা খাওয়ার পর মুখ থেকে স্বাভাবিকভাবেই গন্ধ আসে। যেমন- পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মুখ যদি পরিষ্কার না রাখা হয় তখন দেখা যায় খাদ্যকণাগুলো পচে দাঁতের ফাঁকে থেকে যায় এবং পরে আরো দুর্গন্ধ ছড়ায়।
২. কিছু অসুখে জিহ্বায় ময়লা আবরণ পড়ে যায়, একে বলে কোটিং টাং। তখন মুখে দুর্গন্ধ হয়।
৩. মাঢ়িতে ইনফেকশন হলেও মুখে দুর্গন্ধ হয়।
৪. দেহে পানিশূন্যতা।
৫. দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ।
৬. মুখে আলগা দাঁত বাঁধানো থাকলে।
৭. ধূমপান করলে।
৮. মুখের অপারেশন-পরবর্তী সময় বা দাঁত তোলার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
৯. দাঁতে পকেট সৃষ্টি হয়ে।
১০. অ্যালকোহল পান করলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ আসে।
১১. দাঁতে পাথর জমলে।
এ ছাড়াও কিছু রোগ যেমন-
– সাইনোসাইটিস
– টনসিলাইটিস
– রাইনাইটিস
– দীর্ঘ দিন ধরে ফুসফুসের প্রদাহ থাকলে
– লাং অ্যাবসেস
– গ্যাংরিন
– যক্ষ্মা
– ডায়াবেটিস
– কিডনি রোগে ইত্যাদি ক্ষেত্রে মুখে দুর্গন্ধ হয়।
প্রতিকার : প্রথমেই কারণ খুঁজতে হবে যে, কোন কারণে মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে বলে মনে হয়। যেমন- ধূমপান করলে তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। দাঁতের ক্ষয়রোগ বা উবহঃধষ ঈধৎরবং থাকলে তার উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে হবে।
মাঢ়ি দুর্বল থাকলে বা মাঢ়িতে প্রদাহ থাকলে অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের মাধ্যমে তার উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে হবে। সর্বোপরি প্রথমে কারণ খুঁজে বের করতে হবে। এ ছাড়া লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের কোনো রোগ থাকলে তার উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ খুঁজে তার ব্যবস্থা নেয়ার পর যেটা করণীয় তাহলো নিয়মিত দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
নিয়মিত মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের মাধ্যমে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানের খাবার পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। দাঁতে পাথর জমলে তা স্কেলিং করতে হবে। মাঝে মাঝে হালকা লবণ গরম পানি দিয়ে কুলি করতে হবে।
যারা মুখে আলগা দাঁত ব্যবহার করেন, তাদের উচিত হবে প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্যান্য দাঁত ব্রাশ করার সাথে ওই আলগা দাঁত ভালোভাবে ব্রাশ করে পরিষ্কার রাখা।